কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় আগামীকাল অর্থাৎ ১০ অক্টোবর ২০২৪, দুর্গাপুজোর সপ্তমীর দিন বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
আগামীকাল সকাল থেকেই আকাশ মেঘলা থাকবে এবং দিনের শেষের দিকে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে থাকবে বলে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে।
বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১২.৭ মিলিমিটার পর্যন্ত হতে পারে, যা মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হিসেবে বিবেচিত হয়। এছাড়া বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড়ো হাওয়া বইতে পারে, যার গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সপ্তমীর দিন সকাল থেকেই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে এবং দিনের শেষের দিকে বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা ৮৯% বলে জানানো হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দপ্তরে ৬০০০+ গ্রুপ ডি পদে নিয়োগের সুযোগ
পুজো উদযাপনের ক্ষেত্রে এই আবহাওয়া বেশ প্রভাব ফেলতে পারে। পুজো মণ্ডপগুলিতে জলজমা হতে পারে এবং দর্শনার্থীদের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হতে পারে। তবে পুজো কমিটিগুলি ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
কলকাতা পুলিশের তরফ থেকেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বজ্রপাত থেকে সুরক্ষার জন্য খোলা জায়গায় না থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পুজো মণ্ডপগুলিতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে এই বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে এটি স্থায়ী হবে না, পরের দিন থেকেই আবহাওয়া পরিষ্কার হতে শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতেও একই ধরনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
দুর্গাপুজোর সময় এই ধরনের আবহাওয়া নতুন কিছু নয়। গত কয়েক বছর ধরেই পুজোর সময় বৃষ্টিপাতের ঘটনা ঘটেছে। ২০২৩ সালেও পুজোর সময় বৃষ্টিপাত হয়েছিল। তবে সেবার তুলনায় এবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পুজো উদযাপনের ক্ষেত্রে এই আবহাওয়া কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে পান্ডেল হপিং এবং বাইরে খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা হতে পারে। তবে পুজো কমিটিগুলি ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। অনেক পুজো মণ্ডপেই ছাউনি ও ওয়াটারপ্রুফ আচ্ছাদন লাগানো হচ্ছে।
কলকাতা পুরসভার তরফ থেকেও জলজমা রোধে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নর্দমা পরিষ্কার করা হচ্ছে এবং জল নিষ্কাশনের জন্য অতিরিক্ত পাম্প স্থাপন করা হচ্ছে। পুজো মণ্ডপগুলির আশেপাশে জলজমা হলে তা দ্রুত সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
যাতায়াতের ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। মেট্রো রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রয়োজনে অতিরিক্ত ট্রেন চালানো হবে। বাস ও ট্যাক্সি সংগঠনগুলিও অতিরিক্ত গাড়ি চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পুজো উদযাপনকারীদের জন্য কিছু পরামর্শ:
১. ছাতা ও রেইনকোট সঙ্গে রাখুন।
২. জলরোধী জুতা পরুন।
৩. ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলি ওয়াটারপ্রুফ কভারে রাখুন।
৪. বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গায় না থাকার চেষ্টা করুন।
৫. জলজমা এলাকা এড়িয়ে চলুন।
৬. সর্দি-কাশি থেকে বাঁচতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করুন।
বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও পুজো উদযাপনের আনন্দ কমবে না বলে আশা করা হচ্ছে। বরং বৃষ্টি পুজোর আবহকে আরও রোমাঞ্চকর করে তুলতে পারে। তবে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুজো উদযাপন করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, সপ্তমীর পর থেকে আবহাওয়া ধীরে ধীরে পরিষ্কার হতে শুরু করবে। অষ্টমী ও নবমীতে আকাশ পরিষ্কার থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। দশমীর দিন সকাল থেকেই রোদ্দুর থাকবে, যা বিজয়া দশমীর আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।
সামগ্রিকভাবে, যদিও সপ্তমীতে কিছুটা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, তবুও পুজোর আনন্দ কমবে না। বরং এই বৃষ্টি পুজোর আবহকে আরও রোমাঞ্চকর করে তুলতে পারে। তবে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুজো উদযাপন করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। সবাই সতর্ক থাকলে নিরাপদে ও আনন্দের সাথে পুজো উদযাপন করা সম্ভব হবে।
মন্তব্য করুন