পশ্চিমবঙ্গ ফ্রি-শিপ (WBFS) প্রকল্পটি রাজ্য সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ, যার মূল লক্ষ্য হল রাজ্যের মেধাবী অথচ অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করা। এই প্রকল্পটি কোনো একক স্কিম নয়, বরং এটি রাজ্য সরকারের সেই নীতির প্রতিফলন যার মাধ্যমে বিভিন্ন স্কলারশিপ ও ফি-ছাড়ের যোজনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি, ভর্তি ফি এবং অন্যান্য আবশ্যিক ফি মকুব করা হয়। প্রধানত, স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপ (SVMCM) এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের জন্য টিউশন ফি ওয়েভার (TFW) স্কিমের মাধ্যমে এই ‘ফ্রি-শিপ’-এর সুবিধা প্রদান করা হয়। এই প্রকল্পের অধীনে, নির্দিষ্ট আয়ের সীমার নিচে থাকা পরিবারগুলির ছাত্রছাত্রীরা, যারা নির্দিষ্ট অ্যাকাডেমিক যোগ্যতা পূরণ করে, তারা স্নাতক, স্নাতকোত্তর বা ডিপ্লোমা স্তরে প্রায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়।
ফ্রি-শিপ (WBFS) প্রকল্প আসলে কী? (What Exactly is the Free-Ship (WBFS) Scheme?)
“ফ্রি-শিপ” কথাটির আক্ষরিক অর্থ হল “বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ”। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রেক্ষাপটে, ‘ফ্রি-শিপ (WBFS) প্রকল্প’ কোনো একটি নতুন একক পোর্টাল বা স্কিম নয়, বরং এটি সরকারের একটি সামগ্রিক নীতি বা ‘অ্যামব্রেলা কনসেপ্ট’ (umbrella concept)। এর প্রধান উদ্দেশ্য হল পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রছাত্রীদের উপর থেকে উচ্চশিক্ষার আর্থিক বোঝা কমানো।
অনেক সময় ছাত্রছাত্রীরা ‘স্কলারশিপ’ (Scholarship) এবং ‘ফ্রি-শিপ’ (Free-Ship) – এই দুটি বিষয়কে গুলিয়ে ফেলে। স্কলারশিপ হলো এমন একটি আর্থিক সহায়তা যেখানে ছাত্রছাত্রীরা তাদের অ্যাকাডেমিক বা অন্যান্য কৃতিত্বের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সরাসরি তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পায়, যা তারা পড়াশোনার যেকোনো খরচে (যেমন বই কেনা, হোস্টেল ফি, বা টিউশন ফি) ব্যবহার করতে পারে।
অন্যদিকে, ‘ফ্রি-শিপ’-এর ধারণাটি আরও সুনির্দিষ্ট। এর মাধ্যমে সরাসরি শিক্ষার্থীর থেকে কোনো ফি নেওয়া হয় না। অর্থাৎ, সরকার বা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ওই ছাত্র বা ছাত্রীর তরফ থেকে সম্পূর্ণ বা আংশিক টিউশন ফি (Tuition Fee) মকুব করে দেয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই ‘ফ্রি-শিপ’-এর সুবিধাটি মূলত দুটি প্রধান স্কিমের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের কাছে পৌঁছে দেয়:
১. স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপ (SVMCM): যদিও এটি একটি স্কলারশিপ, তবে এর মাধ্যমে যে অর্থরাশি দেওয়া হয়, তা সাধারণত কোর্সের সম্পূর্ণ টিউশন ফি এবং অন্যান্য খরচ বহন করার জন্য যথেষ্ট। তাই এটি কার্যত একটি ‘ফুল ফ্রি-শিপ’ হিসেবেই কাজ করে।
২. টিউশন ফি ওয়েভার (TFW) স্কিম: এটি একটি খাঁটি ‘ফ্রি-শিপ’ যোজনা, যা বিশেষভাবে পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট এন্ট্রান্স এক্সামিনেশন (WBJEE)-এর মাধ্যমে ইঞ্জিনিয়ারিং, টেকনোলজি এবং ফার্মেসি কোর্সে ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য।
এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে, রাজ্য সরকার নিশ্চিত করতে চায় যে অর্থের অভাবে যেন কোনো মেধাবী ছাত্র বা ছাত্রীর উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন অসম্পূর্ণ থেকে না যায়।
কেন এই প্রকল্পের প্রয়োজন পড়ল? (Why was this scheme needed?)
যেকোনো রাজ্যের উন্নতির প্রধান মাপকাঠি হলো তার মানব সম্পদ, আর সেই সম্পদ তৈরির প্রধান উপায় হলো শিক্ষা। পশ্চিমবঙ্গ সরকার শিক্ষাকে বরাবরই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে। কিন্তু উচ্চশিক্ষার ক্রমবর্ধমান খরচ অনেক সময়ই মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
উচ্চশিক্ষার খরচ এবং সামাজিক প্রেক্ষাপট
বিশেষত গ্রামীণ বাংলা বা মফস্বলের নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির কাছে ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল বা এমনকি সাধারণ ডিগ্রি কোর্সের সেমিস্টার ফি একটি বড় বোঝা। অনেক সময়ই দেখা যায়, ভালো র্যাঙ্ক করা সত্ত্বেও শুধুমাত্র বেসরকারি কলেজের বিপুল খরচ বা এমনকি সরকারি কলেজের ফি জোগাড় করতে না পারায় ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
গ্রস এনরোলমেন্ট রেশিও (GER) বৃদ্ধি
শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যের পারফরম্যান্স মাপার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক হলো গ্রস এনরোলমেন্ট রেশিও (Gross Enrolment Ratio বা GER), অর্থাৎ ১৮ থেকে ২৩ বছর বয়সী মোট জনসংখ্যার কত শতাংশ উচ্চশিক্ষার জন্য নথিভুক্ত হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ অল ইন্ডিয়া সার্ভে অন হায়ার এডুকেশন (AISHE) ২০২১-২২-এর রিপোর্ট অনুসারে, উচ্চশিক্ষায় পশ্চিমবঙ্গের GER হল ২১.২%, যা জাতীয় গড় ২৭.৩%-এর তুলনায় কিছুটা কম। এই পরিসংখ্যান দেখায় যে রাজ্যের আরও বেশি সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় আনা প্রয়োজন। ‘ফ্রি-শিপ’ প্রকল্পগুলি এই GER বাড়াতে সরাসরি সাহায্য করে, কারণ এটি পড়াশোনার প্রধান আর্থিক বাধাটিকেই সরিয়ে দেয়।
মেধাবী ছাত্রদের ধরে রাখা (Stopping Brain Drain)
আর্থিক সহায়তার অভাবে অনেক সময়ই রাজ্যের মেধাবী ছাত্ররা ভিন রাজ্যে বা বিদেশে চলে যায়, অথবা পড়াশোনাই ছেড়ে দেয়। রাজ্য সরকার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড বা এই ‘ফ্রি-শিপ’ প্রকল্পগুলির মাধ্যমে রাজ্যের মধ্যেই তাদের জন্য বিশ্বমানের শিক্ষার সুযোগ তৈরি করে ‘ব্রেন ড্রেন’ আটকাতে চাইছে।
কারা এই ফ্রি-শিপ প্রকল্পের সুবিধা পাবেন? (Who will benefit from this Free-Ship Scheme?)
‘ফ্রি-শিপ’ (WBFS) প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা পূরণ করতে হয়। যেহেতু এই সুবিধাটি বিভিন্ন স্কিমের মাধ্যমে প্রদান করা হয়, তাই যোগ্যতাও স্কিম অনুযায়ী কিছুটা পরিবর্তিত হয়। তবে কিছু প্রাথমিক শর্ত সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
যোগ্যতার প্রধান মানদণ্ড (Primary Eligibility Criteria)
- নাগরিকত্ব ও বসবাস: আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে এবং গত ১০ বছর ধরে রাজ্যে বসবাস করতে হবে।
- পারিবারিক আয়: এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড। আবেদনকারীর পরিবারের বার্ষিক আয় একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে হতে হবে।
- অ্যাকাডেমিক যোগ্যতা: আবেদনকারীকে অবশ্যই শেষ বোর্ড বা সেমিস্টার পরীক্ষায় একটি ন্যূনতম শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।
- শিক্ষার স্তর: এই সুবিধা সাধারণত উচ্চ মাধ্যমিক পরবর্তী কোর্সগুলির (UG, PG, Diploma, Polytechnic) জন্য উপলব্ধ।
বিভিন্ন স্কিম অনুযায়ী যোগ্যতার তুলনা (Comparison of Eligibility across Schemes)
পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রছাত্রীরা প্রধানত যে স্কিমগুলির মাধ্যমে ‘ফ্রি-শিপ’-এর সুবিধা পায়, সেগুলির যোগ্যতার একটি তুলনামূলক সারণি নিচে দেওয়া হলো:
| বৈশিষ্ট (Feature) | স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ (SVMCM) | টিউশন ফি ওয়েভার (TFW) স্কিম | ঐক্যশ্রী (পোস্ট-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ) |
| পরিচালনাকারী সংস্থা | পশ্চিমবঙ্গ উচ্চশিক্ষা দপ্তর | পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড (WBJEEB) | পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও অর্থ নিগম (WBMDFC) |
| লক্ষ্য (Target Group) | সাধারণ, OBC, SC/ST (যোগ্যতা সাপেক্ষে) | সাধারণ, SC/ST, OBC (WBJEE র্যাঙ্ক ভিত্তিক) | সংখ্যালঘু সম্প্রদায় (মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পারসি) |
| পারিবারিক আয়ের সীমা | বার্ষিক ₹২,৫০,০০০ (২.৫ লক্ষ) টাকার কম | বার্ষিক ₹২,৫০,০০০ (২.৫ লক্ষ) টাকার কম | বার্ষিক ₹২,০০,০০০ (২ লক্ষ) টাকার কম |
| অ্যাকাডেমিক যোগ্যতা | শেষ বোর্ড পরীক্ষায় ৬০% নম্বর (HS বা সমতুল) | WBJEE-তে একটি বৈধ জেনারেল মেরিট র্যাঙ্ক (GMR) | শেষ পরীক্ষায় ৫০% নম্বর |
| কোর্সের ধরন | UG (BA, BSc, BCom), B.Tech, MBBS, PG, Diploma, B.Ed | শুধুমাত্র B.Tech, B.Pharm | ক্লাস XI থেকে PhD পর্যন্ত (UG, PG সহ) |
| সুবিধা (Benefit) | কোর্সের উপর ভিত্তি করে বার্ষিক ₹১২,০০০ থেকে ₹৬০,০০০ (যা প্রায় সম্পূর্ণ ফি কভার করে) | ১০০% টিউশন ফি মকুব | বার্ষিক ₹১১,০০০ পর্যন্ত (UG/PG) + মেইনটেন্যান্স ভাতা |
| আবেদন পোর্টাল | svmcm.wbhed.gov.in | WBJEE কাউন্সেলিং-এর সময় | wbmdfc.org |
ফ্রি-শিপ (WBFS) প্রকল্পের প্রধান স্তম্ভগুলি (The Main Pillars of the WBFS Project)
আগেই বলা হয়েছে, WBFS কোনো একক স্কিম নয়, এটি একটি নীতি। এই নীতিকে বাস্তবায়িত করার জন্য রাজ্য সরকারের যে স্তম্ভগুলি বা প্রকল্পগুলি রয়েছে, সেগুলি হলো:
১. স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপ (SVMCM)
এটি পশ্চিমবঙ্গের ‘ফ্রি-শিপ’ বা আর্থিক সহায়তার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ফ্ল্যাগশিপ স্কিম। এটি ‘মেরিট কাম মিনস’ (Merit cum Means) ভিত্তিক, অর্থাৎ মেধা (নম্বর) এবং আর্থিক অবস্থা (আয়) – দুটোই বিচার করা হয়।
কারা পায়?
যেসব ছাত্রছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক বা সমতুল পরীক্ষায় (যেমন ISC, CBSE) ৬০% বা তার বেশি নম্বর পেয়েছে এবং যাদের পারিবারিক আয় বার্ষিক ২.৫ লক্ষ টাকার কম, তারা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারে।
আর্থিক সহায়তার পরিমাণ:
এই স্কলারশিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থরাশি সরাসরি টিউশন ফি মকুব না করলেও, এর পরিমাণ এতটাই বেশি যে তা প্রায় সম্পূর্ণ টিউশন ফি এবং অন্যান্য খরচ বহন করতে পারে।
- UG (Arts/Commerce): প্রতি মাসে ₹১,০০০ (বার্ষিক ₹১২,০০০)
- UG (Science): প্রতি মাসে ₹১,৫০০ (বার্ষিক ₹১৮,০০০)
- UG (Professional Courses): প্রতি মাসে ₹১,৫০০ (বার্ষিক ₹১৮,০০০)
- PG (Arts/Commerce): প্রতি মাসে ₹২,০০০ (বার্ষিক ₹২৪,০০০)
- PG (Science/Professional): প্রতি মাসে ₹২,৫০০ (বার্ষিক ₹৩০,০০০)
- UG (Engineering/MBBS/BDS): প্রতি মাসে ₹৫,০০০ (বার্ষিক ₹৬০,০০০)
- Diploma (Polytechnic): প্রতি মাসে ₹১,৫০০ (বার্ষিক ₹১৮,০০০)
কন্যাশ্রী (K3) সংযোজন:
যেসব ছাত্রছাত্রী কন্যাশ্রী (K1 ও K2) প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছে, তারা যদি স্নাতকোত্তর (PG) স্তরে ভর্তি হয়, তবে তারা SVMCM-এর অধীনে ‘কন্যাশ্রী K3’ হিসেবে আবেদন করতে পারে। এক্ষেত্রে আর্টস ও কমার্স ছাত্রীদের জন্য বার্ষিক ₹২৪,০০০ এবং সায়েন্স ও প্রফেশনাল কোর্সের ছাত্রীদের জন্য বার্ষিক ₹৩০,০০০ টাকা বরাদ্দ থাকে। এর জন্য নম্বরের কোনো নির্দিষ্ট শতাংশের প্রয়োজন হয় না, কেবল PG কোর্সে ভর্তি হলেই চলে।
স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ (SVMCM): আবেদন পদ্ধতি ও যোগ্যতা
২. টিউশন ফি ওয়েভার (TFW) স্কিম
এটি হলো একটি প্রকৃত ‘ফ্রি-শিপ’ বা ফি মকুব প্রকল্প। এটি অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (AICTE)-এর নির্দেশিকা অনুসারে পরিচালিত হয়।
কারা পায়?
যেসব ছাত্রছাত্রী WBJEE পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এবং যাদের পারিবারিক আয় বার্ষিক ২.৫ লক্ষ টাকার কম, তারা কাউন্সেলিং-এর সময় TFW কোটার জন্য আবেদন করতে পারে।
সুবিধা:
এই স্কিমের অধীনে, প্রতিটি সরকারি এবং বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং ও ফার্মেসি কলেজে মোট অনুমোদিত আসনের অতিরিক্ত ৫% আসন TFW প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকে। এই কোটায় সুযোগ পেলে, ছাত্রছাত্রীদের সম্পূর্ণ কোর্সের জন্য (৪ বছর) কোনো টিউশন ফি (Tuition Fee) দিতে হয় না। তবে তাদের অন্যান্য ফি (যেমন কশন মানি, অ্যাডমিশন ফি, সেমিস্টার এক্সাম ফি) দিতে হতে পারে, যা টিউশন ফি-এর তুলনায় খুবই সামান্য।
আবেদন প্রক্রিয়া:
এর জন্য আলাদা করে কোনো আবেদন করতে হয় না। WBJEE-এর ফর্ম ফিলাপ করার সময়ই ‘TFW Status – Yes’ করতে হয় এবং কাউন্সেলিং-এর সময় প্রয়োজনীয় আয়ের শংসাপত্র জমা দিতে হয়। মেধার ভিত্তিতে (GMR র্যাঙ্ক) এই আসনগুলি বণ্টন করা হয়।
৩. অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্কিম (Other Schemes)
- ঐক্যশ্রী (Aikyashree): পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের (মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, পারসি, জৈন) ছাত্রছাত্রীদের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও অর্থ নিগম (WBMDFC) এই স্কলারশিপ প্রদান করে। এর পোস্ট-ম্যাট্রিক, মেরিট-কাম-মিনস এবং ট্যালেন্ট সাপোর্ট প্রোগ্রামগুলি (TSP) উচ্চশিক্ষার ফি জোগাতে সাহায্য করে, যা কার্যত ‘ফ্রি-শিপ’-এর মতোই কাজ করে।
- শিক্ষাশ্রী (Sikshashree): এটি বিশেষভাবে তফসিলি জাতি (SC) এবং তফসিলি উপজাতি (ST) সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য, যারা ক্লাস V থেকে VIII পর্যন্ত পড়ে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে তাদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পোস্ট-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ (OASIS পোর্টালের মাধ্যমে) উপলব্ধ, যা টিউশন ফি এবং রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা প্রদান করে।
কিভাবে ফ্রি-শিপ (WBFS) প্রকল্পের জন্য আবেদন করবেন? (How to apply for the Free-Ship (WBFS) Scheme?)
যেহেতু ‘ফ্রি-শিপ’ বিভিন্ন স্কিমের মাধ্যমে দেওয়া হয়, তাই আবেদনের প্রক্রিয়াও ভিন্ন ভিন্ন। নিচে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্কিমগুলির আবেদন প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে আলোচনা করা হলো।
একটি ধাপে ধাপে নির্দেশিকা (A Step-by-Step Guide)
ধাপ ১: সঠিক স্কিমটি চিহ্নিত করুন (Identify the Right Scheme)
- আপনি যদি সাধারণ বা OBC শ্রেণীর ছাত্র হন এবং HS-এ ৬০% বা বেশি নম্বর পান, তবে আপনার জন্য SVMCM।
- আপনি যদি WBJEE দিচ্ছেন এবং আপনার আয় ২.৫ লক্ষের কম হয়, তবে আপনার জন্য TFW।
- আপনি যদি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের হন, তবে আপনার জন্য Aikyashree।
- আপনি যদি SC/ST হন, তবে আপনার জন্য OASIS পোর্টালের মাধ্যমে পোস্ট-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ।
ধাপ ২: যোগ্যতা পুনরায় যাচাই করুন (Re-check Eligibility)
আবেদন করার আগে নিশ্চিত করুন যে আপনি পারিবারিক আয় এবং অ্যাকাডেমিক নম্বরের সমস্ত মানদণ্ড পূরণ করছেন। ভুল তথ্যের ভিত্তিতে আবেদন করলে তা বাতিল হয়ে যাবে।
ধাপ ৩: প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ করুন (Gather Documents)
আবেদনের আগেই সমস্ত ডকুমেন্ট স্ক্যান করে প্রস্তুত রাখুন। (বিস্তারিত তালিকা পরবর্তী বিভাগে দেখুন)।
ধাপ ৪: অফিসিয়াল পোর্টালে যান (Visit the Official Portal)
আপনাকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট অফিসিয়াল পোর্টালে গিয়ে আবেদন করতে হবে।
- SVMCM:
https://svmcm.wbhed.gov.in/ - Aikyashree:
https://wbmdfc.org/ - OASIS (SC/ST/OBC):
https://oasis.gov.in/ - TFW:
https://wbjeeb.nic.in/(এটি কাউন্সেলিং-এর অংশ)
ধাপ ৫: রেজিস্ট্রেশন এবং ফর্ম ফিলাপ (Registration and Form Fill-up)
- পোর্টালে গিয়ে ‘New Registration’-এ ক্লিক করুন।
- আপনার প্রাথমিক তথ্য (নাম, মোবাইল নম্বর, ইমেল) দিয়ে রেজিস্টার করুন।
- একটি অ্যাপ্লিকেশন আইডি (Application ID) ও পাসওয়ার্ড তৈরি হবে।
- লগইন করে মূল আবেদনপত্রটি পূরণ করুন। এখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ (IFSC কোড সহ) খুব সাবধানে পূরণ করতে হবে।
ধাপ ৬: ডকুমেন্ট আপলোড এবং জমা (Upload Documents and Submit)
- স্ক্যান করা নথিপত্রগুলি নির্দিষ্ট ফরম্যাটে (সাধারণত PDF বা JPG) এবং নির্দিষ্ট সাইজের (e.g., 50kb-400kb) মধ্যে আপলোড করুন।
- সাবমিট করার আগে সম্পূর্ণ আবেদনপত্রটি ‘Preview’ করে ভালো করে দেখে নিন।
- ফাইনাল সাবমিট (Final Submit) করুন এবং আবেদনপত্রের একটি কপি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে রাখুন।
ধাপ ৭: অ্যাপ্লিকেশন স্ট্যাটাস ট্র্যাক করুন (Track Application Status)
আবেদন করার পর নিয়মিত আপনার অ্যাপ্লিকেশন আইডি দিয়ে লগইন করে স্ট্যাটাস চেক করুন। আবেদনটি প্রথমে প্রতিষ্ঠান (স্কুল/কলেজ) স্তরে ভেরিফাই হয়, তারপর জেলা স্তর এবং শেষে রাজ্য স্তরে অনুমোদিত (Approved) হয়। কোনো সমস্যা হলে (যেমন ডকুমেন্ট অস্পষ্ট) আপনার আবেদন ‘Defect’ হিসেবে ফেরত আসতে পারে, যা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঠিক করে পুনরায় জমা দিতে হয়।
প্রয়োজনীয় নথিপত্র (কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন?) (Required Documents)
সঠিক এবং বৈধ নথিপত্র জমা দেওয়া আবেদন অনুমোদনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নিচে একটি সাধারণ তালিকা দেওয়া হলো (স্কিম অনুযায়ী সামান্য পরিবর্তন হতে পারে):
- পরিচয় প্রমাণ (Identity Proof): আধার কার্ড (Aadhaar Card) (বাধ্যতামূলক)।
- ঠিকানার প্রমাণ (Address Proof): আধার কার্ড, ভোটার কার্ড (Voter ID), বা ডিজিটাল রেশন কার্ড (Digital Ration Card)।
- পারিবারিক আয়ের শংসাপত্র (Family Income Certificate):
- এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি।
- SVMCM-এর জন্য: রাজ্য সরকারের ‘Group A’ গেজেটেড অফিসার, BDO, SDO, বা জয়েন্ট BDO পদমর্যাদার অফিসার দ্বারা প্রদত্ত ইনকাম সার্টিফিকেট। (নির্দিষ্ট ফরম্যাট SVMCM পোর্টালে পাওয়া যায়)।
- TFW-এর জন্য: WBJEEB দ্বারা নির্ধারিত ফরম্যাট (Proforma ‘a’ বা ‘b’) অনুযায়ী BDO/SDO বা সমতুল্য কর্তৃপক্ষ দ্বারা ইস্যু করা।
- Aikyashree-এর জন্য: পঞ্চায়েত প্রধান/মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিলের দ্বারা প্রদত্ত আয়ের শংসাপত্রও গ্রহণযোগ্য হতে পারে, তবে গেজেটেড অফিসার বা BDO-এর সার্টিফিকেট বেশি গ্রহণযোগ্য।
- শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ (Academic Proof):
- মাধ্যমিক বা সমতুল পরীক্ষার মার্কশিট (উভয় পিঠ)।
- শেষ বোর্ড/কাউন্সিল পরীক্ষার মার্কশিট (যেমন উচ্চ মাধ্যমিক) (উভয় পিঠ)।
- ভর্তির প্রমাণ (Proof of Admission):
- বর্তমান কোর্সে ভর্তির রসিদ বা ফি পেমেন্টের স্লিপ (Admission Receipt)।
- কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত ‘Bonafide Certificate’ (কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়)।
- ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট (Bank Account):
- ছাত্রের নিজের নামে একটি জাতীয়কৃত ব্যাঙ্কের (Nationalized Bank) অ্যাকাউন্টের পাসবুকের প্রথম পাতার স্ক্যান কপি, যেখানে অ্যাকাউন্ট নম্বর, IFSC কোড এবং ছাত্রের নাম স্পষ্ট লেখা থাকতে হবে। (যৌথ অ্যাকাউন্ট বা পিতামাতার অ্যাকাউন্ট গ্রহণযোগ্য নয়)।
- ছবি ও স্বাক্ষর (Photo & Signature): আবেদনকারীর সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং স্পষ্ট স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি।
কবে থেকে শুরু হবে এই প্রকল্প? (When will this scheme start?)
এই প্রশ্নটির উত্তর হলো, এই ‘ফ্রি-শিপ’ প্রকল্পগুলি ইতিমধ্যেই চালু রয়েছে এবং প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে এগুলির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়।
- স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ (SVMCM): সাধারণত, উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর এবং কলেজ ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হলে SVMCM-এর আবেদন (নতুন এবং রিনুয়াল উভয়ই) শুরু হয়। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের আবেদন প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য, আশা করা যায় যে আবেদন প্রক্রিয়া ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাস নাগাদ শুরু হবে। ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত SVMCM-এর অফিসিয়াল পোর্টালে নজর রাখতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
- টিউশন ফি ওয়েভার (TFW) স্কিম: এই স্কিমের আবেদন কোনো নির্দিষ্ট তারিখে হয় না। এটি WBJEE কাউন্সেলিং প্রক্রিয়ার একটি অংশ। যখন ছাত্রছাত্রীরা WBJEE পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে কাউন্সেলিং-এর জন্য রেজিস্টার করে, তখনই তাদের TFW স্ট্যাটাস ‘Yes’ করতে হয় এবং নথি আপলোড করতে হয়। ২০২৪ সালের কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৫ সালের জন্য, এটি WBJEE 2025 পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর (সাধারণত জুন-জুলাই মাসে) শুরু হবে।
- ঐক্যশ্রী (Aikyashree): ঐক্যশ্রী প্রকল্পের আবেদনও সাধারণত প্রতি বছর জুলাই-আগস্ট মাসে শুরু হয় এবং একটি দীর্ঘ সময় ধরে চলে (প্রায় ডিসেম্বর-জানুয়ারি পর্যন্ত)।
ফ্রি-শিপ প্রকল্প বনাম স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড: কোনটি আপনার জন্য?
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দুটি ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প হলো এই ‘ফ্রি-শিপ’ (SVMCM/TFW) এবং পশ্চিমবঙ্গ স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড (WBSCC)। দুটিই পড়াশোনায় আর্থিক সহায়তা দিলেও এদের প্রকৃতি সম্পূর্ণ ভিন্ন।
ফ্রি-শিপ (SVMCM/TFW):
- ধরণ: এটি একটি ‘গ্রান্ট’ বা ‘ওয়েভার’, অর্থাৎ এটি কোনো ঋণ নয়। এই টাকা ফেরত দিতে হয় না।
- উপকারিতা: সম্পূর্ণ আর্থিক মুক্তি, কোনো ঋণের বোঝা থাকে না।
- সীমাবদ্ধতা:
- কঠোর যোগ্যতা: আপনাকে অবশ্যই মেধার (যেমন ৬০% নম্বর) এবং আয়ের (যেমন ২.৫ লক্ষের কম) উভয় শর্তই পূরণ করতে হবে।
- সীমিত কভারেজ: SVMCM একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেয় (যেমন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর জন্য বার্ষিক ৬০,০০০ টাকা)। যদি আপনার বেসরকারি কলেজের ফি এর চেয়ে বেশি হয়, তবে বাকিটা নিজেকেই দিতে হবে। TFW শুধুমাত্র টিউশন ফি মকুব করে, হোস্টেল বা বইপত্রের খরচ নয়।
স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড (WBSCC):
- ধরণ: এটি একটি ‘শিক্ষাগত ঋণ’ (Education Loan), যা খুব সহজ শর্তে এবং কম সুদে (মাত্র ৪% সরল সুদ) পাওয়া যায়।
- উপকারিতা:
- ব্যাপক কভারেজ: এটি টিউশন ফি, হোস্টেল ফি, বইপত্র, ল্যাপটপ কেনা—অর্থাৎ পড়াশোনার যাবতীয় খরচ কভার করে।
- উচ্চ সীমা: সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া যায়।
- সহজ যোগ্যতা: এর জন্য কোনো নির্দিষ্ট শতাংশ নম্বরের প্রয়োজন নেই। পশ্চিমবঙ্গের যেকোনো বাসিন্দা যিনি উচ্চশিক্ষায় ভর্তি হচ্ছেন, তিনি আবেদন করতে পারেন।
- সীমাবদ্ধতা: এটি একটি ঋণ, যা কোর্স শেষ হওয়ার পর চাকরি পেয়ে ১৫ বছরের মধ্যে শোধ করতে হবে।
সিদ্ধান্ত:
- যদি আপনি মেধাবী হন এবং আপনার পারিবারিক আয় ২.৫ লক্ষ টাকার কম হয়, তবে আপনার প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত SVMCM বা TFW। কারণ এটি বিনামূল্যে সহায়তা।
- যদি আপনার SVMCM/TFW-এর যোগ্যতা না থাকে (যেমন নম্বর ৬০%-এর কম বা আয় ২.৫ লক্ষের বেশি), অথবা যদি আপনার পড়াশোনার খরচ (বিশেষত বেসরকারি কলেজ বা হোস্টেল) SVMCM-এর ভাতার চেয়ে অনেক বেশি হয়, তবে আপনার জন্য স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড হলো সেরা বিকল্প।
- অনেকে দুটি সুবিধাই একসাথে নেওয়ার চেষ্টা করেন, তবে সাধারণত তা অনুমোদিত হয় না। আপনাকে একটি হলফনামা দিতে হতে পারে যে আপনি অন্য কোনো সরকারি স্কলারশিপ নিচ্ছেন না।
পরিসংখ্যান: পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষায় সরকারি বিনিয়োগ
পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়, তা তার বাজেট বরাদ্দ এবং সুবিধাভোগীর সংখ্যা থেকেই স্পষ্ট।
- বাজেট বরাদ্দ: পশ্চিমবঙ্গ বাজেট ২০২৪-২৫-এ, শিক্ষা খাতের জন্য (স্কুল ও উচ্চশিক্ষা) মোট বাজেটের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বরাদ্দ করা হয়েছে। সরকার শিক্ষাকে সামাজিক সুরক্ষা খাতের মতোই গুরুত্ব দিয়েছে।
- SVMCM সুবিধাভোগী: পশ্চিমবঙ্গ উচ্চশিক্ষা দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রী স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপের মাধ্যমে উপকৃত হন। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষেও এই সংখ্যাটি বিশাল, যা রাজ্যের মেধাবী ছাত্রদের উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যেতে সরাসরি সাহায্য করছে।
- কন্যাশ্রী প্রকল্পের সাফল্য: কন্যাশ্রী প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে, এই প্রকল্পটি ইতিমধ্যেই ৯০ লক্ষেরও বেশি ছাত্রীকে আর্থিক সহায়তার আওতায় এনেছে (অক্টোবর ২০২৪ পর্যন্ত তথ্য)। এই প্রকল্প নারী শিক্ষায় এক নীরব বিপ্লব এনেছে এবং ড্রপ-আউটের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ ফ্রি-শিপ (WBFS) প্রকল্পটি রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি আশীর্বাদ। এটি কেবল একটি আর্থিক সহায়তা প্রকল্প নয়, এটি পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাগত মানচিত্রকে পরিবর্তন করার একটি প্রচেষ্টা। SVMCM, TFW এবং Aikyashree-এর মতো প্রকল্পগুলির মাধ্যমে, রাজ্য সরকার এটা নিশ্চিত করছে যে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা যেন বাংলার কোনো প্রতিভার বিকাশের পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।
সঠিক তথ্য, সময়মতো আবেদন এবং প্রয়োজনীয় নথিপত্রের প্রস্তুতিই পারে ছাত্রছাত্রীদের এই বিপুল সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে সাহায্য করতে। আপনার যদি যোগ্যতা থাকে, তবে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট পোর্টালে নজর রাখুন এবং আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হলেই ফর্ম ফিলাপ করুন। বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষার এই সুযোগ গ্রহণ করে আপনি কেবল নিজের ভবিষ্যৎই গড়বেন না, পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নেও শরিক হবেন।











