Semiconductor plant in West Bengal employment opportunities: পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় দেশের প্রথম জাতীয় নিরাপত্তা সেমিকন্ডাক্টর ফ্যাব্রিকেশন প্ল্যান্ট স্থাপনের ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে আলোচনার পর এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।এই প্রকল্পের মাধ্যমে উভয় দেশের সামরিক হার্ডওয়্যার, গুরুত্বপূর্ণ টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক এবং ইলেকট্রনিক্স সেক্টরের জন্য চিপ উৎপাদন করা হবে। ভারত সেমিকন্ডাক্টর মিশনের সহায়তায় এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। ভারত সেমি, ৩রডিআইটেক এবং মার্কিন স্পেস ফোর্সের মধ্যে একটি কৌশলগত প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্বের অংশ হিসেবে এই প্রকল্প গড়ে উঠবে।
Semiconductor plant: কলকাতায় সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট, চিপ শিল্পে নতুন যুগের সূচনা!
Semiconductor plant: কলকাতায় সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট, চিপ শিল্পে নতুন যুগের সূচনা!
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের জন্য জমি চিহ্নিত করে রেখেছে। তিনি বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই জমি চিহ্নিত করে রেখেছি। তারাও (মার্কিন কর্তৃপক্ষ) একটি জমি দেখেছেন। এই কেন্দ্র তৈরি হয়ে গেলে এটি একটি বিশ্বমানের ঘটনা হবে। তারা আমাদের প্রতিভাকে ব্যবহার করতে পারবে। পরিকাঠামো আমাদের প্রতিভাকে বাড়াতে সাহায্য করবে।”এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় ২০,০০০ উচ্চ প্রযুক্তির চাকরি হবে। এছাড়া পরোক্ষভাবে আরও ৮০,০০০ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
টাটা গ্রুপ এই প্রকল্পে ৯১,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এর মধ্যে ৭৫,০০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে ধোলেরায় সেমিকন্ডাক্টর ফ্যাব প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য। বাকি ১৬,০০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে আসামে একটি OSAT (Outsourced Semiconductor Assembly and Test) ইউনিট স্থাপনের জন্য।ধোলেরার ফ্যাব প্ল্যান্টে প্রতি মাসে ৫০,০০০ ওয়েফার উৎপাদন করা হবে এবং প্রতি বছর ৩ বিলিয়ন চিপ তৈরি হবে। এই চিপগুলি হাই পারফরম্যান্স কম্পিউটিং, ইলেকট্রিক গাড়ি, প্রতিরক্ষা খাত এবং কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স সহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহৃত হবে।টাটা সন্স চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরন জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের শেষের দিকে এই প্ল্যান্ট থেকে প্রথম চিপ উৎপাদন শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই প্রকল্পের ফলে পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। কলকাতা শহর এবং পূর্ব ভারতের সমগ্র অঞ্চলের জন্য এটি একটি রূপান্তরকারী প্রকল্প হবে। বিনিয়োগের প্রবাহ এবং উচ্চ প্রযুক্তির কর্মসংস্থান সৃষ্টির ফলে স্থানীয় অর্থনীতি চাঙ্গা হবে এবং পরিকাঠামো উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।এছাড়া কলকাতার সেমিকন্ডাক্টর হাব হিসেবে উত্থান ঘটলে আশপাশের অঞ্চলেও উদ্ভাবনের প্রসার ঘটবে। স্টার্টআপ, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ফ্যাব প্ল্যান্টের সঙ্গে সহযোগিতা করে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ঘটাবে। এর ফলে আঞ্চলিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং ভারতের পশ্চিম ও দক্ষিণের প্রযুক্তি-নির্ভর রাজ্যগুলির সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের অর্থনৈতিক বৈষম্য কমবে।তবে এই প্রকল্প নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, এই প্রকল্প আসার পেছনে রাজ্য সরকারের অবদান রয়েছে। তিনি বলেছেন, গত বছর থেকেই রাজ্যের আইটি দপ্তর এবং ওয়েবেল বিভিন্ন সেমিকন্ডাক্টর শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসছিল।অন্যদিকে বিজেপির আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য বলেছেন, “আমরা আশা করি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সুযোগটি নষ্ট করবেন না, যেমনটি তিনি অন্য সব ক্ষেত্রে করেছেন।” তিনি আরও বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশ্চিত করতে হবে যে প্রকল্পটি তার সরকার ও দলের চাঁদাবাজদের জিম্মি হয়ে না যায়। পশ্চিমবঙ্গ আর একবার হারতে পারে না।”
বাড়িতে প্রাণবন্ত বাতাস: ইনডোর প্ল্যান্টের অজানা উপকারিতা!
বাড়িতে প্রাণবন্ত বাতাস: ইনডোর প্ল্যান্টের অজানা উপকারিতা!
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রকল্প সফল হলে তা শুধু পশ্চিমবঙ্গের নয়, সমগ্র ভারতের অর্থনীতির জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে এর জন্য রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের মধ্যে সমন্বয় এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। প্রকল্পটি যাতে সময়মত ও সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত হয় সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি।