আগামীকাল অর্থাৎ ২৫ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া বেশ পরিবর্তনশীল থাকবে। এই সময়কালে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই সপ্তাহে তাপমাত্রা ২৮°C থেকে ৩৬°C এর মধ্যে থাকবে এবং আর্দ্রতা ৭০% থেকে ৮৪% এর মধ্যে ওঠানামা করবে।
২৫ আগস্ট রবিবার থেকে শুরু করে সপ্তাহের প্রথম দিকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি থাকবে। রবিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২°C এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৮°C আশা করা হচ্ছে। এদিন বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাতের সম্ভাবনা ৮৪%। সোমবার ও মঙ্গলবার আবহাওয়া অনুরূপ থাকবে, তবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে।
IMF Update:ভারত ২০২৭ সালের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হবে
বুধবার ২৯ আগস্ট থেকে আবহাওয়ার পরিস্থিতিতে পরিবর্তন আসতে শুরু করবে। এদিন সকালে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে, কিন্তু দিনের বেলায় আকাশ পরিষ্কার থাকবে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫°C পর্যন্ত উঠতে পারে। বৃহস্পতিবার ৩০ আগস্ট থেকে তাপমাত্রা আরও বাড়তে শুরু করবে। এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬°C পর্যন্ত উঠতে পারে এবং আকাশ প্রধানত মেঘলা থাকবে।
সপ্তাহের শেষের দিকে আবার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বাড়বে। শুক্রবার ৩১ আগস্ট বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা ৫৫% এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫°C আশা করা হচ্ছে। শনিবার ১ সেপ্টেম্বর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আরও বাড়বে।
কলকাতার ক্ষেত্রে, আগামী সপ্তাহে প্রতিদিনই বৃষ্টিপাত বা বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ২৪ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা ৪৩% থেকে ৯০% এর মধ্যে থাকবে। এই সময়কালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৮৬°F থেকে ৯৪°F (৩০°C থেকে ৩৪°C) এর মধ্যে থাকবে।
পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতেও অনুরূপ আবহাওয়া থাকবে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি হতে পারে। বীরভূম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া প্রভৃতি জেলায় বজ্রবিদ্যুৎসহ ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
Useful Tips for Motor Cycle: আপনার পুরোনো বাইকে করে তুলুন নতুন [ ১০০% কার্যকরী টোটকা]
এই আবহাওয়ার কারণে কৃষিকাজে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটতে পারে। বিশেষ করে ধান চাষে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তবে পাট চাষের ক্ষেত্রে এই বৃষ্টিপাত উপকারী হবে। শহরাঞ্চলে জলজট ও যানজটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বজ্রপাতের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জনসাধারণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষ করে বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গায় না থাকার এবং উঁচু গাছ বা বিদ্যুতের খুঁটির কাছে না দাঁড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে নিচু এলাকায় জলজমাট হতে পারে, তাই সেসব এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
এই আবহাওয়ার পরিস্থিতি মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গোপসাগর থেকে আসা জলীয় বাষ্প এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের দিক থেকে আসা শীতল বাতাসের সংমিশ্রণে এই বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এই ধরনের আবহাওয়া চলতে পারে।
পর্যটন শিল্পের উপর এই আবহাওয়ার প্রভাব পড়তে পারে। দার্জিলিং, দিঘা, মান্দারমণি প্রভৃতি পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমণকারীদের সংখ্যা কমতে পারে। তবে কিছু পর্যটক বর্ষার সৌন্দর্য উপভোগ করতে এই সময়ে ভ্রমণে বের হতে পারেন।
Yuvashree Prakalpo Job Vacancy: নতুন চাকরির বিজ্ঞপ্তি, কিভাবে আবেদন করবেন, পরীক্ষার খুঁটিনাটি
কৃষকদের জন্য কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যেমন, ধান ক্ষেতে অতিরিক্ত জল জমে থাকলে তা বের করে দেওয়া, ফসলে কীটনাশক প্রয়োগ না করা, এবং পাকা ফসল দ্রুত সংগ্রহ করা। মৎস্যচাষীদের পুকুরের পাড় শক্তিশালী করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শহরাঞ্চলে বৃষ্টির পানি জমে যাওয়া রোধ করতে পৌরসভা ও পুরনিগমগুলি নালা পরিষ্কার করার কাজ শুরু করেছে। জনসাধারণকেও নিজ নিজ বাড়ির সামনের নালা পরিষ্কার রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সামগ্রিকভাবে, আগামী সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া বেশ পরিবর্তনশীল থাকবে। বৃষ্টিপাত, বজ্রপাত, এবং উচ্চ আর্দ্রতার কারণে জনজীবন কিছুটা ব্যাহত হতে পারে। তবে কৃষি ও জলসম্পদের দিক থেকে এই বৃষ্টিপাত উপকারী হবে। জনসাধারণকে আবহাওয়া পূর্বাভাস নিয়মিত চেক করার এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন