Trump swearing-in ceremony details 2025: ২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু তিনি কখন আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে অনেকেই উৎসুক।ট্রাম্প ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন। এই দিনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে “Inauguration Day” বা শপথ গ্রহণ দিবস হিসেবে পরিচিত। ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত মার্কিন কংগ্রেস ভবনের পশ্চিম প্রান্তে এই অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
এটি হবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ এবং সংবিধানের ২২তম সংশোধনী অনুযায়ী তাঁর শেষ মেয়াদ। একই সঙ্গে জেডি ভ্যান্স ৫০তম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন।নির্বাচনের পর থেকে শপথ গ্রহণ পর্যন্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তারিখ রয়েছে। ৭ নভেম্বর থেকে রাজ্যগুলো ভোটের ফলাফল প্রত্যয়ন শুরু করেছে। ১১ নভেম্বর থেকে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রস্তুতিমূলক ব্রিফিং শুরু হয়েছে। ১৭ ডিসেম্বর ইলেক্টরাল কলেজের সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট দেবেন।৬ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ইলেক্টরাল কলেজের ভোট গণনা করা হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প পাবেন প্রায় ৩.৩৬ কোটি টাকা বেতন!
এই অনুষ্ঠানে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস সভাপতিত্ব করবেন। তিনি প্রতিটি রাজ্যের ইলেক্টরাল সার্টিফিকেট গণনা করে বিজয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবেন।অবশেষে ২০ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে ডোনাল্ড ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন। এই অনুষ্ঠানটি বেশ জাঁকজমকপূর্ণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। শপথ গ্রহণের পর ট্রাম্প তাঁর ভাষণ দেবেন। এরপর বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউস ত্যাগ করবেন।শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর কংগ্রেসের যৌথ কমিটি একটি মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবে। এরপর সামরিক কুচকাওয়াজের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শেষ হবে। সন্ধ্যায় ঐতিহ্যবাহী Inaugural Ball অনুষ্ঠিত হবে।নির্বাচন ও শপথ গ্রহণের মধ্যে এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধান কেন? এর পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, এই সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ফলাফল যাচাই-বাছাই করা হয়।
দ্বিতীয়ত, নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট তাঁর মন্ত্রিসভা গঠন ও নীতিমালা প্রণয়নের জন্য প্রস্তুতি নেন। তৃতীয়ত, সরকারি দপ্তরগুলো নতুন প্রশাসনের জন্য প্রস্তুত হয়।এই চার মাসের সময়কাল সংবিধানে উল্লেখ করা আছে। ১৮৪৫ সাল থেকেই এই ঐতিহ্য চলে আসছে। তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল মূলত কৃষিভিত্তিক দেশ। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হত যাতে কৃষকরা ফসল কাটার পর ভোট দিতে পারেন। আবার শীতের আগেই নির্বাচন শেষ করা হত।ট্রাম্পের এই জয় অনেকের কাছেই বিস্ময়কর। ২০২০ সালের নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিতে অস্বীকার করা, ক্যাপিটল হিলে সহিংসতা উসকে দেওয়া, ফেলোনি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং দুইবার হত্যাচেষ্টার শিকার হওয়ার পরও তিনি আবার ক্ষমতায় ফিরছেন।
অনেক এলজিবিটিকিউ মার্কিন নাগরিক ট্রাম্পের জয়ের খবরে হতাশ হয়েছেন। তাঁরা আশঙ্কা করছেন যে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে তাঁদের অধিকার খর্ব হতে পারে। ট্রাম্পের আগের মেয়াদে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের অনেক অধিকার হরণ করা হয়েছিল।তবে এখনও জো বাইডেনই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ২০ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত তিনিই দায়িত্বে থাকবেন। ট্রাম্প শপথ না নেওয়া পর্যন্ত বাইডেনই প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। মে মাসে কংগ্রেসের উভয় কক্ষ একটি যৌথ কমিটি গঠন করেছে।
Shots Fired At Trump Rally: মৃত্যুর মুখোমুখি ট্রাম্প, রক্তাক্ত মাটিতে আমেরিকার গণতন্ত্র
এই কমিটি অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় মঞ্চ ও অন্যান্য অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের তত্ত্বাবধান করছে। সেপ্টেম্বর মাস থেকে মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রস্তুতি চলছে। ক্যাপিটল পুলিশ, ওয়াশিংটন মেট্রোপলিটন পুলিশ ও পার্ক পুলিশ এই অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। ২৪টি রাজ্য ইতিমধ্যেই জাতীয় গার্ড মোতায়েনের প্রস্তাব দিয়েছে।ট্রাম্প হবেন মার্কিন ইতিহাসে দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট যিনি পরপর নয়, বরং বিরতির পর দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড ১৮৮৪ ও ১৮৯২ সালে নির্বাচিত হয়েছিলেন।২০২১ সালে বাইডেনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ট্রাম্প উপস্থিত ছিলেন না।
কিন্তু এবার বাইডেন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারিন জিন-পিয়েরে বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট বাইডেন শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে বিশ্বাস করেন। তাই তিনি অবশ্যই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।”সামগ্রিকভাবে, ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি হবে মার্কিন ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এদিন ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ কেমন হবে তা সময়ই বলবে। তবে এখন থেকেই এই ঐতিহাসিক দিনটির জন্য প্রস্তুতি চলছে।
মন্তব্য করুন