প্রশ্ন: ছোটতে নাচ থেকে শুরু করে তোমার অভিনয়ের জার্নিটা একটু বলবে?
পায়েল বসাক: ছোটবেলায় টিভিতে যখন গান হত, সেটা দেখেই আমি আপন মনে নাচ করতাম। সেটা দেখে আমার বাবা ও বাড়ির অন্যান্যরা নাচ শেখানো শুরু করেন এবং প্রথম যে শিক্ষিকার কাছে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয় তিনি বলেন ছোট ছোট বাচ্চারা টিভি দেখে অনেক হাত পা নাড়ে কিন্তু নাচটা সবার দ্বারা হয় না। তখন সেটা শুনে আমাদের সবার খুব খারাপ লাগে এবং বাবা সেখানে আমাকে নাচ শেখান না বাড়িতে নিয়ে চলে আসেন। এরপর অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে আমি নাচ শিখি এবং পড়াশোনার সাথে সাথে নাচটা চালিয়ে যাই। সেই দুবছর আট মাস বয়স থেকে আজ অবধি এখনও নাচ শিখছি এবং নাচের চর্চা চলছে।
নাচের একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল অভিনয়,তাই নাচের সাথে সাথে আমার অভিনয়টাও খুব ভালো লাগতো এবং বিভিন্ন এক্সপ্রেশন গুলো আমি ফলো করতাম আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে। ছোটবেলায় বাচ্চারা যেরকম মাথায় ঘোমটা দিয়ে বাড়ির বউ সেজে অভিনয় করে তেমন আর কি। অভিনয়ের আমার তেমন প্রথাগত ট্রেনিং নেই , কিন্তু নাচের একটা বিশেষ অংশ হচ্ছে অভিনয় তাই সেই ট্রেনিংটা আমার ছোট থেকেই রয়েছে বলা চলে।
প্রতিবাদের মুখে দুর্গাপুজো: RG Kar কাণ্ডের ছায়ায় বাংলার উৎসব
প্রশ্ন: পুজোর মধ্যে বাইরে বেড়িয়ে নতুন কিছু অভিজ্ঞতা হল? সানের মহালয়ার পর?
পায়েল বসাক: এইবছর আমি প্রথমবার কলকাতায় পুজো দেখেছি আর এই বছর প্রথমবার সান বাংলায় মহালয়াতে দেবীর ভূমিকায় আমাকে দেখানো হয়েছে তাই বাইরে গিয়ে কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে। আগে ইউটিউব সূত্রে যে পরিচয়টা ছিল সে কারণে অনেকেই রাস্তাঘাটে দেখা হলে সেলফি তুলতে চাইতেন কিন্তু এইবার উপরি পাওনা হলো মানুষজনের সাথে দেখা হলে তারা বলছেন,‘এইতো সাক্ষাৎ মা দূর্গার সাথে দেখা হয়ে গেল’। তারপর আমি শান্তিপুরে আমার বাড়িতে গিয়েছিলাম, সেখানেও আমি একটা নার্সারিতে গিয়েছিলাম সেখানেও সবাই দেখে বলছেন সাক্ষাৎ মা দূর্গা চলে এসেছেন আর আমাদের কি চিন্তা! এরকম টুকরো টুকরো অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে যেগুলো খুবই ভালো লাগার একটি বিষয়। এটা আমাদের পুরো টিমের কাছে একটা বিরাট বড় পাওনা যে মানুষের কাজটা ভালো লেগেছে বলেই মানুষ কথা বলছেন।
প্রশ্ন: যদি সামনের বছর মহিষাসুরমর্দিনীর অফার পাও কোনও চ্যানেলে এমনকি কিছু জায়গা আছে, যেটা আরেকটু এক্সপ্লোর করতে চাও? বা কোথাও গিয়ে কি মনে হয়েছে এই জায়গাটা আরেকটু লেন্থি হলে ভালো হয় বা এই জায়গায় নিজেকে আর একটু নিখুঁত করা যেতে পারতো?
পায়েল বসাক: দেখো ভালোর তো কোন শেষ নেই আর একজন শিল্পী কখনোই তার কাজে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারে না। তাই আমি বলব পরের বছর কোন চ্যানেল থেকে যদি আবার প্রস্তাব পায় তাহলে অবশ্যই চেষ্টা করব চরিত্রটাকে আরও ভালো করে ফুটিয়ে তোলার। তবে ওইভাবে নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল যে এই জায়গাটা আরেকটু ফুটিয়ে তোলা যেতে পারত। কারণ এইসবকিছুর অনেকটাই ক্রিপ্ট লিখছেন ও যিনি ডিরেকশন দিচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করে।
‘নিজেদের ইমেজ বজায় রাখতে সবটা ধামাচাপা দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী’- অভিনেতা সুমন কুন্ডু
প্রশ্ন:কাজের ক্ষেত্রে বা এমনি মেয়ে হিসাবে তিলোত্তমা বা নারী সুরক্ষা নিয়ে কিছু বলার আছে?
পায়েল বসাক : নারী সুরক্ষা নিয়ে তো অবশ্যই বলার আছে আমার সাথে কখনো কোন কিছু খারাপ ঘটেনি কিন্তু আশেপাশে তো সব সময় এরকম ঘটনা দেখি তাছাড়া তিলোত্তমার ঘটনাটা হওয়ার পর আমার নিজেরই রাত্রে বেলায় বাইরে বেরোতে ভয় করে। দশটার পর কোনও কাজ থাকলে মনে হত, থাক আর যাব না কালকে যাব তো এই একটা ভয় আমাদের ভেতরে ঢুকে গেছে এবং বহু মেয়ে ছেলে নির্বিশেষে রোজই প্রায় নির্যাতিত হচ্ছে। সেদিক থেকে আমার মনে হয় আমাদের মনের মধ্যে থেকে এই ভয়টা উপরে ফেলা দরকার এবং যারা অন্যায় করছে তাদের শাস্তি হওয়া দরকার তাতেই কিন্তু পরিস্থিতি ঠিক হবে।