হস্ত মৈথুন না করলে শরীর ও মানসিক স্বাস্থ্যে কী প্রভাব পড়ে?

Challenges of nofap journey: হস্ত মৈথুন (Masturbation) মানুষের যৌন জীবনের একটি স্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক অংশ। এটি শারীরিক ও মানসিক তৃপ্তি লাভের একটি পদ্ধতি, যা সাধারণত এককভাবে করা হয়। তবে অনেকেই…

Debolina Roy

 

Challenges of nofap journey: হস্ত মৈথুন (Masturbation) মানুষের যৌন জীবনের একটি স্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক অংশ। এটি শারীরিক ও মানসিক তৃপ্তি লাভের একটি পদ্ধতি, যা সাধারণত এককভাবে করা হয়। তবে অনেকেই মনে করেন, হস্ত মৈথুন না করলে শরীর এবং মন কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। আবার কেউ কেউ মনে করেন, এটি না করাই ভালো। এই লেখায় আমরা বিশ্লেষণ করব, হস্ত মৈথুন না করলে শরীর ও মন কীভাবে প্রভাবিত হতে পারে।

হস্ত মৈথুন না করার সম্ভাব্য প্রভাব

হস্ত মৈথুন না করার ফলে শরীর ও মানসিক স্বাস্থ্যে কিছু ইতিবাচক এবং নেতিবাচক প্রভাব দেখা যেতে পারে। এই প্রভাবগুলো ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে এবং এটি নির্ভর করে ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক অবস্থার ওপর।

হস্তমৈথুন: কত দিন পর করলে স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে ভালো? জেনে নিন বিস্তারিত

১. যৌন উত্তেজনা ও মানসিক চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে

  • হস্ত মৈথুন যৌন উত্তেজনা প্রশমিত করার একটি উপায়। এটি না করলে অনেকের ক্ষেত্রে যৌন উত্তেজনা জমে থাকতে পারে, যা মানসিক চাপ বাড়াতে পারে।
  • গবেষণায় দেখা গেছে, যৌন উত্তেজনা দীর্ঘ সময় ধরে দমন করলে ঘুমের সমস্যা, অস্বস্তি এবং মনোযোগের অভাব দেখা দিতে পারে।

২. হরমোনাল ভারসাম্য

  • হস্ত মৈথুনের সময় শরীরে ডোপামিন এবং অক্সিটোসিন নামক “হ্যাপি হরমোন” নিঃসৃত হয়, যা মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়। এটি না করলে এই হরমোনগুলোর অভাব হতে পারে।
  • তবে নিয়মিত হস্ত মৈথুন না করলেও শরীর স্বাভাবিকভাবে এই হরমোন উৎপাদন করতে সক্ষম।

৩. যৌন স্বাস্থ্য

  • দীর্ঘ সময় ধরে হস্ত মৈথুন না করলে কিছু পুরুষের ক্ষেত্রে নকচুর্নাল এমিশন (স্বপ্নদোষ) হতে পারে। এটি শরীরের জন্য স্বাভাবিক এবং ক্ষতিকারক নয়।
  • অন্যদিকে, যারা নিয়মিত হস্ত মৈথুন করেন তাদের প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমতে পারে বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।

হস্ত মৈথুন না করার ইতিবাচক দিক

অনেকেই মনে করেন, হস্ত মৈথুন থেকে বিরত থাকা মানসিক শক্তি এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ বাড়ায়। নিচে এর কিছু ইতিবাচক দিক তুলে ধরা হলো:

ইতিবাচক দিক বর্ণনা
শক্তি সংরক্ষণ অনেকে বিশ্বাস করেন, হস্ত মৈথুন এড়ালে শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পায়।
আত্মনিয়ন্ত্রণ এটি ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে।
ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধ অনেক ধর্মে এটি নিষিদ্ধ হওয়ায় বিরত থাকা নৈতিক শান্তি এনে দিতে পারে।

হস্ত মৈথুন না করার নেতিবাচক দিক

যদিও হস্ত মৈথুন থেকে বিরত থাকা অনেকের জন্য ইতিবাচক হতে পারে, তবে এর কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে:

নেতিবাচক দিক বর্ণনা
যৌন ফ্রাস্ট্রেশন দীর্ঘ সময় ধরে যৌন তৃপ্তি না পেলে হতাশা তৈরি হতে পারে।
ঘুমের সমস্যা যৌন উত্তেজনা প্রশমিত না হলে ঘুম ব্যাহত হতে পারে।
মানসিক চাপ ডোপামিন নিঃসরণ কম হলে মানসিক চাপ বেড়ে যেতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতামত

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বা অন্যান্য বৈজ্ঞানিক গবেষণা অনুযায়ী, হস্ত মৈথুন একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। এটি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয় যদি এটি অতিরিক্ত মাত্রায় করা না হয়। তবে এটি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয় এবং কেউ যদি এটি না করেন, তাতেও কোনো সমস্যা নেই।

পিরিয়ডের সময় যৌন মিলন: কী জানা প্রয়োজন?

হস্ত মৈথুন করা বা না করা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত এবং এটি স্বাস্থ্যগত কোনো বাধ্যবাধকতা নয়। যারা এটি করেন বা করেন না, উভয়ের ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যগত প্রভাব নির্ভর করে তাদের জীবনযাত্রা এবং মানসিক অবস্থার ওপর। তাই এ বিষয়ে ভুল ধারণা বা সামাজিক চাপ থেকে মুক্ত থেকে নিজের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

About Author
Debolina Roy

দেবলীনা রায় একজন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক লেখক, যিনি স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কে পাঠকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিবেদিত। ডাক্তারি নিয়ে পড়াশোনা করা দেবলীনা তার লেখায় চিকিৎসা বিষয়ক জটিল তথ্যগুলি সহজ ভাষায় উপস্থাপন করেন, যা সাধারণ পাঠকদের জন্য সহজবোধ্য এবং উপকারী। স্বাস্থ্য, পুষ্টি, এবং রোগ প্রতিরোধের বিষয়ে তার গভীর জ্ঞান এবং প্রাঞ্জল লেখনী পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। দেবলীনা রায়ের লক্ষ্য হল সঠিক ও তথ্যনির্ভর স্বাস্থ্যবিধি প্রচার করা এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা।