ইজরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমির মাজদাল শামসের একটি ফুটবল মাঠে শনিবার সন্ধ্যায় হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় ১২ জন শিশু ও কিশোর নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৩০ জন। ইজরায়েলি কর্তৃপক্ষ এই হামলার জন্য হিজবুল্লাহকে দায়ী করেছে, যদিও হিজবুল্লাহ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
শনিবার সন্ধ্যায় মাজদাল শামসের ড্রুজ গ্রামের একটি ফুটবল মাঠে এই রকেটটি আঘাত হানে। সেই সময় মাঠে শিশু ও কিশোররা ফুটবল খেলছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সাইরেন বাজার পর তারা আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটে যায়, কিন্তু ১৫ সেকেন্ডের মধ্যেই রকেটটি মাঠে এসে পড়ে।
ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “হিজবুল্লাহকে এই হামলার চড়া মূল্য দিতে হবে।” ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেন, “হিজবুল্লাহ এই হামলার জন্য দায়ী এবং তারা এর পরিণতি ভোগ করবে।” ইজরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা লেবাননের বিভিন্ন স্থানে হিজবুল্লাহর অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে।
হিজবুল্লাহর মুখপাত্র মোহাম্মদ আফিফ এই হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, “মাজদাল শামসের ঘটনায় হিজবুল্লাহর কোনও সম্পর্ক নেই।” হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তারা ইজরায়েলের একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা করেছে, কিন্তু ফুটবল মাঠে হামলার দায় তারা স্বীকার করেনি।
এই হামলার পর ইজরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইজরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, রকেটটি ইরানি নির্মিত ফালাক-১ রকেট ছিল এবং এটি দক্ষিণ লেবাননের শেবা গ্রাম থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। ইজরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় প্রস্তুত রয়েছে এবং উত্তর সীমান্তে তাদের প্রস্তুতি বাড়ানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, “আমরা এই হামলার পরিণতি এড়াতে কাজ করছি এবং গাজায় সংঘাতের অবসান ঘটাতে চাই।” ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি বলেছেন, “ইজরায়েল যদি নতুন কোনও অভিযান চালায়, তবে তার পরিণতি ভোগ করতে হবে।”
মাজদাল শামস একটি ড্রুজ গ্রাম, যেখানে প্রায় ২৫,০০০ ড্রুজ বাস করে। ইজরায়েল ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধে গোলান মালভূমি দখল করে এবং ১৯৮১ সালে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে সংযুক্ত করে। ড্রুজ সম্প্রদায়ের অধিকাংশ সদস্য ইজরায়েলের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেনি এবং তারা নিজেদের সিরিয়ার নাগরিক মনে করে।
এই হামলার পর ইজরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইজরায়েলি কর্তৃপক্ষ হিজবুল্লাহকে দায়ী করে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, অন্যদিকে হিজবুল্লাহ এই হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
তারিখ | স্থান | নিহত সংখ্যা | আহত সংখ্যা | দায়ী পক্ষ |
---|---|---|---|---|
২৭ জুলাই, ২০২৪ | মাজদাল শামস, গোলান মালভূমি | ১২ জন | ৩০ জন | হিজবুল্লাহ (অস্বীকার) |
এই ঘটনার পর ইজরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা বেড়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। ইজরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে এই সংঘর্ষের পরিণতি কী হতে পারে, তা সময়ই বলে দেবে।