ভারতের চাকরির বাজার ২০২৫ সালে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাচ্ছে, যেখানে প্রযুক্তি, পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ এবং দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে দেশটি বিশ্ব অর্থনীতিতে শক্ত অবস্থান তৈরি করছে। এদিকে, আমেরিকার চাকরির বাজারে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেলেও ভবিষ্যতে পুনরুদ্ধারের আশা রয়েছে। ভারতের চাকরির বাজারে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। Taggd-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ভারতীয় চাকরি ক্ষেত্রে ৯.৭৫% বৃদ্ধি প্রত্যাশিত, যা নতুন ভূমিকা এবং প্রতিস্থাপনের প্রয়োজনীয়তার মাধ্যমে কর্মসংস্থান ২৪% পর্যন্ত বাড়াতে পারে। Tier ২ ও Tier ৩ শহরগুলো যেমন জয়পুর, কোয়েম্বাটুর, এবং ইন্দোর নতুন প্রতিভার কেন্দ্র হয়ে উঠছে। পাশাপাশি, AI এবং রোবটিক্সের মতো প্রযুক্তি দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে মধ্য-পর্যায়ের কর্মীদের প্রস্তুত করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, আমেরিকার চাকরির বাজারে ধীরগতির প্রভাব স্পষ্ট। ২০২৪ সালে চাকরি খোঁজার হার কমে যাওয়ার ফলে ২০২৫ সালের প্রথম ভাগ স্থিতিশীল থাকলেও দ্বিতীয় ভাগে পুনরুদ্ধারের আশা করা হচ্ছে। Gallup-এর জরিপ অনুযায়ী, কর্মীদের অসন্তুষ্টি এবং চাকরি পরিবর্তনের হার কমে গেছে, যা মার্কিন অর্থনীতিতে স্থবিরতা সৃষ্টি করেছে। তবে স্বাস্থ্যসেবা খাতে বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, যেখানে নার্সিং এবং হোম হেলথ এড-এর মতো ভূমিকা ৪০% নতুন চাকরি তৈরিতে নেতৃত্ব দেবে।
ভারতের চাকরি ক্ষেত্রের মূল চালকগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো প্রযুক্তি এবং পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ। AI-এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে, যেখানে ৫০% কোম্পানি দক্ষতা মূল্যায়নে এবং ৩৬% রিজিউম স্ক্রিনিংয়ে AI ব্যবহার করছে। পরিবেশবান্ধব কাজের ক্ষেত্রে ৩০% বার্ষিক বৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে, যা দেশের কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ভারতের গিগ ইকোনমি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৫ সালের মধ্যে গিগ প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রায় ১০ মিলিয়ন নতুন চাকরি সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, হাইব্রিড কাজের মডেল জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, যেখানে ৬৭% ভারতীয় কোম্পানি কর্মীদের জন্য নমনীয় কাজের পরিবেশ তৈরি করছে।
বিশ্বব্যাপী শ্রমবাজারে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন এবং দক্ষতার অভাব একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। World Economic Forum-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, AI এবং রোবোটিক্সের মতো প্রযুক্তি দ্রুত পরিবর্তন আনছে, যা নতুন কাজ তৈরি করছে কিন্তু প্রচলিত ভূমিকা বিলুপ্ত করছে। এই পরিস্থিতিতে দক্ষতা উন্নয়ন এবং পুনঃপ্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ভারতের বিপুল জনসংখ্যা এবং তরুণ প্রজন্মের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। দেশের উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এবং EdTech প্ল্যাটফর্মগুলো দক্ষতা উন্নয়ন এবং মাইক্রো-ক্রেডেনশিয়াল প্রদান করছে, যা কর্মীদের ভবিষ্যৎ কাজের জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করছে।
উপসংহারে বলা যায়, ভারতের চাকরি ক্ষেত্র দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় শক্ত অবস্থান তৈরি করছে। তবে এই অগ্রগতিকে টেকসই করতে হলে দক্ষতা উন্নয়ন, প্রযুক্তি গ্রহণ এবং পরিবেশবান্ধব উদ্যোগকে আরও জোরদার করতে হবে।