ভারতের সাথে সম্পর্কের টানাপোড়েনে, নিজ দলের চাপের মুখে ট্রুডোর ইস্তফার ডেডলাইন

ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভারতের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করে নিজ দেশে চরম চাপের মুখে পড়েছেন। ভারতের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক নষ্টের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও তিনি এখন বিপাকে। ট্রুডোর নিজ দলের…

Avatar

 

ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভারতের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করে নিজ দেশে চরম চাপের মুখে পড়েছেন। ভারতের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক নষ্টের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও তিনি এখন বিপাকে। ট্রুডোর নিজ দলের সাংসদরাই তাকে আগামী ৪ দিনের মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

গত সোমবার ক্যানাডার ফেডারেল পুলিশ বাহিনী Royal Canadian Mounted Police (RCMP) অভিযোগ করেছে যে, ভারতীয় সরকারের এজেন্টরা ক্যানাডায় খালিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রুডো বলেছিলেন, RCMP-এর দেওয়া প্রমাণ “উপেক্ষা করা যাবে না”।

West Bengal: নির্বাচন পরবর্তী হিংসা ও রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বহীনতা

কিন্তু ভারত এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, ক্যানাডা কোনো ঠোস প্রমাণ দিতে পারেনি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ট্রুডো রাজনৈতিক স্বার্থে ক্যানাডার বিশাল শিখ ভোটব্যাংককে খুশি করার জন্য এই অভিযোগ করেছেন।

এদিকে ক্যানাডার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও ট্রুডো প্রচণ্ড চাপে পড়েছেন। তার নিজ দলের অন্তত ২০ জন সাংসদ একটি চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করে ট্রুডোকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা ট্রুডোকে আগামী ৪ দিনের মধ্যে পদত্যাগ করার আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

একটি সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, ক্যানাডার মাত্র ২৮% মানুষ মনে করেন ট্রুডো পুনরায় নির্বাচনে জয়ী হওয়ার যোগ্য। ৬৫% মানুষ তার পদত্যাগ চান। লিবারেল পার্টির সমর্থন ২৬%-এ নেমে এসেছে।

এমনকি ট্রুডোর নিজ আসনের ভোটাররাও তার বিরুদ্ধে মুখ ফিরিয়েছেন। ৫৭% ভোটার চান তাদের সাংসদ ট্রুডোকে পদত্যাগের জন্য চাপ দিক

শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বৃদ্ধি: ভারতের কূটনৈতিক চাল

ট্রুডোর জনপ্রিয়তা হ্রাসের পেছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ। তার সরকারের অপ্রতুল পরিষেবা ও অভিবাসন নীতির ব্যর্থতা নাগরিকদের ক্ষুব্ধ করেছে। চীনের হস্তক্ষেপের বিষয়ে নীরব থাকাও তাকে জনপ্রিয়তা হারাতে বাধ্য করেছে।

তবে ভারতের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনাই ট্রুডোর জন্য শেষ পর্যন্ত বুমেরং হয়ে ফিরেছে। ক্যানাডার গণমাধ্যম ও বিশেষজ্ঞরা ট্রুডোকে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তারা বলছেন, প্রমাণ ছাড়াই ভারতকে দোষারোপ করে ট্রুডো নিজেই বিপদে পড়েছেন।

সব মিলিয়ে ট্রুডোর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন ধোঁয়াশায় ঘেরা। ভারতের সাথে সম্পর্ক ভাঙনের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরেও তিনি মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। আগামী কয়েক দিনই বোঝা যাবে ট্রুডো কী পদক্ষেপ নেন। তবে যেভাবেই হোক, ভারতের সাথে বিরোধ বাধিয়ে তিনি যে নিজের পায়েই কুড়াল মারলেন, তা এখন পরিষ্কার।

 

About Author
Avatar

আন্তর্জাতিক খবরের সর্বশেষ আপডেট, গভীর বিশ্লেষণ এবং বিশ্বের প্রভাবশালী ঘটনাবলীর বিস্তারিত প্রতিবেদন পেতে আমাদের International Desk-এ আসুন। বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ, রাজনৈতিক গতিবিধি, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং সাংস্কৃতিক ঘটনাবলী সম্পর্কে জানতে এই পাতাটি আপনার একমাত্র গন্তব্য।