Benefits of Onion Peel: পেঁয়াজের খোসা ফেলে দেওয়া বন্ধ করুন! জেনে নিন এর ১০টি অবাক করা গুণ

Benefits of Onion Peel: পেঁয়াজ রান্নার একটি অপরিহার্য উপাদান। কিন্তু আমরা অধিকাংশই পেঁয়াজের খোসা ফেলে দিই। অথচ এই খোসাতেই লুকিয়ে আছে অনেক গুণ। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজের খোসায় রয়েছে…

Debolina Roy

 

Benefits of Onion Peel: পেঁয়াজ রান্নার একটি অপরিহার্য উপাদান। কিন্তু আমরা অধিকাংশই পেঁয়াজের খোসা ফেলে দিই। অথচ এই খোসাতেই লুকিয়ে আছে অনেক গুণ। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজের খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্লাভোনয়েড এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

২০২৩ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজের খোসায় সাধারণ পেঁয়াজের তুলনায় ৬ গুণ বেশি কুয়েরসেটিন নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং ফাইবার।

আসুন জেনে নেওয়া যাক পেঁয়াজের খোসার ১০টি অবাক করা গুণ:

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

পেঁয়াজের খোসায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ২০২২ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত পেঁয়াজের খোসার চা পান করলে সর্দি-কাশি, ফ্লু-এর মতো ভাইরাল সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

পেঁয়াজের খোসায় উপস্থিত কুয়েরসেটিন রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।

নারকেল জলের এমন যাদু, শরীর থাকবে পুরো ফিট

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে

২০২৩ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজের খোসার নিয়মিত ব্যবহার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত ক্রোমিয়াম ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়।

ওজন কমাতে সাহায্য করে

পেঁয়াজের খোসায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে। এছাড়াও এতে উপস্থিত কুয়েরসেটিন শরীরে চর্বি জমা হওয়া রোধ করে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

ত্বকের যত্নে

পেঁয়াজের খোসায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়। এছাড়াও এর অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য ত্বকের চুলকানি ও র্যাশ দূর করতে সাহায্য করে।

চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে

পেঁয়াজের খোসায় উপস্থিত সালফার চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। এছাড়াও এতে থাকা কুয়েরসেটিন চুল পাতলা হওয়া রোধ করে।

গোল্ডেন বুট্স: বিশ্বের শীর্ষ ৫ মূল্যবান ক্লাব, দেখে নিন আপনার পছন্দের ক্লাবটি এই তালিকায় আছে কিনা

ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক

২০২৩ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজের খোসায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে।

হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করে

পেঁয়াজের খোসায় প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে যা হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে উপস্থিত ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে হাড়কে শক্তিশালী করে।

লিভারের স্বাস্থ্য উন্নত করে

পেঁয়াজের খোসায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারের ক্ষতি রোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি লিভারের বিষাক্ত পদার্থ নিষ্কাশনে সহায়তা করে।

দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়

পেঁয়াজের খোসায় উপস্থিত কুয়েরসেটিন ও ভিটামিন সি চোখের ছানি প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

পুষ্টি উপাদান পরিমাণ (প্রতি ১০০ গ্রাম)
কুয়েরসেটিন ২০-৪০ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি ৫০-১০০ মিলিগ্রাম
ফাইবার ২০-২৫ গ্রাম
ক্যালসিয়াম ৩০০-৪০০ মিলিগ্রাম
আয়রন ৫-১০ মিলিগ্রাম

 

পেঁয়াজের খোসা ব্যবহারের কয়েকটি সহজ উপায়:

১. পেঁয়াজের খোসার চা: পেঁয়াজের খোসা ফুটন্ত জলে ১০-১৫ মিনিট সিদ্ধ করে চা তৈরি করুন। এতে মধু মিশিয়ে পান করুন।

২. ত্বকের টোনার: পেঁয়াজের খোসা সিদ্ধ করা জল ঠান্ডা করে ত্বকে লাগান।

৩. চুলের মাস্ক: পেঁয়াজের খোসা গুঁড়ো করে দই-এর সাথে মিশিয়ে চুলে লাগান।

৪. সুপে ব্যবহার: রান্নার সময় সুপে পেঁয়াজের খোসা দিয়ে দিন। পরে ছেঁকে ফেলুন।

৫. গাছের সার: শুকনো পেঁয়াজের খোসা গুঁড়ো করে গাছের গোড়ায় ব্যবহার করুন।

Blood Pressure: অলক্ষ্যে বাড়তে থাকা উচ্চ রক্তচাপের কারণসমূহ

বিশেষজ্ঞদের মতে, পেঁয়াজের খোসার নিয়মিত ব্যবহার আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে। তবে এর অতিরিক্ত ব্যবহার পেটে গ্যাস, বমি বমি ভাব ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই মাত্রা মেনে এর ব্যবহার করা উচিত।

ডাঃ সুদীপ্ত চক্রবর্তী, বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ বলেন, “পেঁয়াজের খোসা একটি অত্যন্ত মূল্যবান খাদ্য উপাদান যা আমরা প্রায়শই অবহেলা করি। এর নিয়মিত ব্যবহার আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে।”

সুতরাং, আর পেঁয়াজের খোসা ফেলে দেবেন না। এর সঠিক ব্যবহার করে উপকৃত হোন।

About Author
Debolina Roy

দেবলীনা রায় একজন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক লেখক, যিনি স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কে পাঠকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিবেদিত। ডাক্তারি নিয়ে পড়াশোনা করা দেবলীনা তার লেখায় চিকিৎসা বিষয়ক জটিল তথ্যগুলি সহজ ভাষায় উপস্থাপন করেন, যা সাধারণ পাঠকদের জন্য সহজবোধ্য এবং উপকারী। স্বাস্থ্য, পুষ্টি, এবং রোগ প্রতিরোধের বিষয়ে তার গভীর জ্ঞান এবং প্রাঞ্জল লেখনী পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। দেবলীনা রায়ের লক্ষ্য হল সঠিক ও তথ্যনির্ভর স্বাস্থ্যবিধি প্রচার করা এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা।