Benefits of Onion Peel: পেঁয়াজ রান্নার একটি অপরিহার্য উপাদান। কিন্তু আমরা অধিকাংশই পেঁয়াজের খোসা ফেলে দিই। অথচ এই খোসাতেই লুকিয়ে আছে অনেক গুণ। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজের খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্লাভোনয়েড এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
২০২৩ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজের খোসায় সাধারণ পেঁয়াজের তুলনায় ৬ গুণ বেশি কুয়েরসেটিন নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং ফাইবার।
পেঁয়াজের খোসায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ২০২২ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত পেঁয়াজের খোসার চা পান করলে সর্দি-কাশি, ফ্লু-এর মতো ভাইরাল সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।
পেঁয়াজের খোসায় উপস্থিত কুয়েরসেটিন রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।
নারকেল জলের এমন যাদু, শরীর থাকবে পুরো ফিট
২০২৩ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজের খোসার নিয়মিত ব্যবহার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত ক্রোমিয়াম ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়।
পেঁয়াজের খোসায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে। এছাড়াও এতে উপস্থিত কুয়েরসেটিন শরীরে চর্বি জমা হওয়া রোধ করে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
পেঁয়াজের খোসায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়। এছাড়াও এর অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য ত্বকের চুলকানি ও র্যাশ দূর করতে সাহায্য করে।
পেঁয়াজের খোসায় উপস্থিত সালফার চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। এছাড়াও এতে থাকা কুয়েরসেটিন চুল পাতলা হওয়া রোধ করে।
গোল্ডেন বুট্স: বিশ্বের শীর্ষ ৫ মূল্যবান ক্লাব, দেখে নিন আপনার পছন্দের ক্লাবটি এই তালিকায় আছে কিনা
২০২৩ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজের খোসায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে।
পেঁয়াজের খোসায় প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে যা হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে উপস্থিত ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে হাড়কে শক্তিশালী করে।
পেঁয়াজের খোসায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারের ক্ষতি রোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি লিভারের বিষাক্ত পদার্থ নিষ্কাশনে সহায়তা করে।
পেঁয়াজের খোসায় উপস্থিত কুয়েরসেটিন ও ভিটামিন সি চোখের ছানি প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ (প্রতি ১০০ গ্রাম) |
---|---|
কুয়েরসেটিন | ২০-৪০ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন সি | ৫০-১০০ মিলিগ্রাম |
ফাইবার | ২০-২৫ গ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ৩০০-৪০০ মিলিগ্রাম |
আয়রন | ৫-১০ মিলিগ্রাম |
১. পেঁয়াজের খোসার চা: পেঁয়াজের খোসা ফুটন্ত জলে ১০-১৫ মিনিট সিদ্ধ করে চা তৈরি করুন। এতে মধু মিশিয়ে পান করুন।
২. ত্বকের টোনার: পেঁয়াজের খোসা সিদ্ধ করা জল ঠান্ডা করে ত্বকে লাগান।
৩. চুলের মাস্ক: পেঁয়াজের খোসা গুঁড়ো করে দই-এর সাথে মিশিয়ে চুলে লাগান।
৪. সুপে ব্যবহার: রান্নার সময় সুপে পেঁয়াজের খোসা দিয়ে দিন। পরে ছেঁকে ফেলুন।
৫. গাছের সার: শুকনো পেঁয়াজের খোসা গুঁড়ো করে গাছের গোড়ায় ব্যবহার করুন।
Blood Pressure: অলক্ষ্যে বাড়তে থাকা উচ্চ রক্তচাপের কারণসমূহ
বিশেষজ্ঞদের মতে, পেঁয়াজের খোসার নিয়মিত ব্যবহার আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে। তবে এর অতিরিক্ত ব্যবহার পেটে গ্যাস, বমি বমি ভাব ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই মাত্রা মেনে এর ব্যবহার করা উচিত।
ডাঃ সুদীপ্ত চক্রবর্তী, বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ বলেন, “পেঁয়াজের খোসা একটি অত্যন্ত মূল্যবান খাদ্য উপাদান যা আমরা প্রায়শই অবহেলা করি। এর নিয়মিত ব্যবহার আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে।”
সুতরাং, আর পেঁয়াজের খোসা ফেলে দেবেন না। এর সঠিক ব্যবহার করে উপকৃত হোন।
মন্তব্য করুন