Uric acid levels by age: শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা সঠিক সীমার মধ্যে থাকলে গাউট, কিডনি স্টোন, এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমে যায়। বয়স এবং লিঙ্গ অনুযায়ী ইউরিক অ্যাসিডের রেফারেন্স মান ভিন্ন হয়ে থাকে। নিচে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ইউরিক অ্যাসিডের স্বাভাবিক মাত্রা: বয়স ও লিঙ্গভিত্তিক চার্ট
ইউরিক অ্যাসিড শরীরে প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন হয় এবং এটি কিডনির মাধ্যমে প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। তবে, অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড শরীরে জমলে এটি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।
- পুরুষদের জন্য স্বাভাবিক রেঞ্জ: ৩.৫–৭.৭ mg/dL
- মহিলাদের জন্য স্বাভাবিক রেঞ্জ: ২.৬–৬.০ mg/dL
- শিশুদের জন্য: বয়স অনুযায়ী ১.৮–৫.৫ mg/dL (১-১০ বছর) এবং বয়ঃসন্ধিকালে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে কলার প্রভাব: একটি বিস্তারিত বিশ্লেষণ
বয়স অনুযায়ী ইউরিক অ্যাসিডের পরিবর্তন
- শিশু ও কিশোর-কিশোরী:
- বয়ঃসন্ধির আগে ছেলেমেয়ে উভয়ের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা প্রায় সমান থাকে।
- বয়ঃসন্ধিতে (৯-১০ বছর) ছেলেদের ইউরিক অ্যাসিড দ্রুত বাড়ে, যা হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে হয়।
- প্রাপ্তবয়স্ক:
- পুরুষদের ক্ষেত্রে ২০-৫০ বছর বয়সে ইউরিক অ্যাসিড সর্বোচ্চ থাকে।
- মহিলাদের ক্ষেত্রে মেনোপজের আগে ইউরিক অ্যাসিড কম থাকে, তবে মেনোপজের পরে তা বাড়তে পারে।
উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড: ঝুঁকি ও কারণ
যখন শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা স্বাভাবিক সীমার বাইরে যায়, তখন এটি বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়:
- গাউট (Gout): উচ্চ মাত্রার ইউরিক অ্যাসিড জয়েন্টে জমে গিয়ে ব্যথা ও ফোলাভাব সৃষ্টি করে।
- কিডনি স্টোন: অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে।
- কার্ডিওভাসকুলার রোগ: গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১ mg/dL ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধিতে হৃদরোগের ঝুঁকি ৬% বাড়ে।
উচ্চতার কারণসমূহ:
- উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার (যেমন লাল মাংস, সামুদ্রিক মাছ)
- অ্যালকোহল গ্রহণ
- স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন
- কিডনি কার্যকারিতার সমস্যা।
ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে করণীয়
- খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন:
- পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলুন (যেমন লাল মাংস, অর্গান মিট)।
- বেশি পানি পান করুন যাতে কিডনি কার্যক্ষম থাকে।
- চিনিযুক্ত পানীয় ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: স্থূলতা কমিয়ে আনলে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।
- চিকিৎসা: প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শে ইউরিক অ্যাসিড কমানোর ওষুধ গ্রহণ করুন।
স্বাস্থ্যকর রেঞ্জ বজায় রাখার উপকারিতা
স্বাভাবিক রেঞ্জে ইউরিক অ্যাসিড বজায় রাখলে গাউট, কিডনি স্টোন, এবং হৃদরোগের মতো বড় সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। পুরুষদের ক্ষেত্রে ৪–৭ mg/dL এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৩–৬ mg/dL রেঞ্জ সবচেয়ে নিরাপদ বলে ধরা হয়।
ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বয়স, লিঙ্গ এবং খাদ্যাভ্যাস অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং সঠিক জীবনযাপন অভ্যাস বজায় রাখলে এই মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। আপনার যদি উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড থাকে, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।